ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে দুই যুবককে জোরপূর্বক অপারেশনের মাধ্যমে পুরুষাঙ্গ কর্তন করে হিজড়ায় রুপান্তর করাসহ নানান গুণঞ্জনের অবশান ঘটলো। সোমবার (১৬ জুলাই) কালীগঞ্জ থানা গেটে হঠাৎ করেই দেখা হয় বিতর্কিত সেই দুই হিজড়ার সাথে। এসময় হিজড়া সর্দার রত্নাসহ তাদের দুই জনের সাথে কথা হয়।
এ সময় তারা দুই জনেই জানান, ‘জোর পূর্বক অপারেশনের মাধ্যমে পুরুষাঙ্গ কর্তনের মত কোন ঘটনাই ঘটেনি। মূলত আমাদের দুই জনের প্রস্রাবের সিরাই অনেক দিন আগে থেকে ইনফেকশন হয়েছিল যে কারণে খুব জ্বালা-যন্ত্রণা করতো। আর সেই যন্ত্রণা থেকে রক্ষা পেতেই অপারেশন করি।’
আমরা কখনই পুরুষ বা নারী কোনটাই ছিলাম না। কালীগঞ্জ পৌরসভাধীন নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কেসমত আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম বর্তমানে (মারিয়) (২২) ও একই উপজেলার ঘোপপাড়া গ্রামের শামসুল ইসলামের ছেলে কাজল বর্তমানেও (কাজল) (২৩)। কালীগঞ্জের হিজড়া সর্দার মনিরা ওরফে রত্না হিজড়ার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ মিথ্যা বলেও জানান তারা দুজন।
এসময় সরেজমিনে নিশ্চিন্তপুর গ্রামে গেলে ওই গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা পলাশসহ এলাকাবাসী জানান, এতোকিছুর পর ৮-৯ দিন পূর্বে তাদের দুইজনের বাবা মা এসে হিজড়া সর্দারের হাতে তাদেরকে তুলে দেয়। হিজড়া সর্দার তাদের দুই জনকে রাখবে না বলে জানালে তাদের বাবা মা অনেক অনুনয় বিনয় করে হিজড়া সর্দারের হাতে তুলে দিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে হিজড়া সর্দার রত্না কারো নাম না উল্লেখ করে জানান, এদের দুই জনকে নিয়ে আমাদের নিজেদের মধ্যে অনেক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি লাভের জন্য একটি কুচক্রী মহল বিভিন্ন ধারণের মিথ্যা বানোয়াট কথা ছড়িয়েছে কিন্তু এরা দুইজন যে পূর্ব থেকেই হিজড়া তার মেডিকেল রিপোর্টও আছে বলে জানান তিনি।
রত্নার দাবি, হিজড়াদের অন্য একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধে এ রকম ভুয়া সংবাদ ছড়িয়ে শুধুমাত্র মান-সম্মান ক্ষুন্নের জন্য মিথ্যা অপচেষ্টা করেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কালীগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান খান জানান, যেই দু’জন হিজড়াকে নিয়ে বির্তক সৃষ্টি হয়েছিল তারা দুজনেই থানায় এসে লিখিত দিয়ে গিয়েছে। তারা দুই জনে পূর্ব থেকেই হিজড়া ছিল। এ ব্যাপারে তারা কাউকে দায়ি করেনি। শুধুমাত্র তাদের ব্যক্তিগত সমস্যা জনিত কারণে তারা নিজেরা সেচ্ছাই অপারেশন করিয়েছে। কেউ তাদের উপর কোন প্রকার চাপ সৃষ্টি করেনি বলেও জানান ওসি।
উল্লেখ্য, বেশকিছু দিন আগে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে শরিফুল ইসলাম (২২) ও কাজল হোসেন (২৩) নামের দুই যুবককে জোর পূর্বক অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পুরুষাঙ্গ কেটে হিজড়ায় রুপান্তর করার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ সুলতান আহম্মেদ। শরিফুল ইসলাম কালীগঞ্জ উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কেসমত গাজীর ছেলে ও কাজল একই উপজেলার ঘোপপাড়া গ্রামের শামসুল ইসলামের ছেলে।
আর এই গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত হলেন কালীগঞ্জের হিজড়া সরদার মনিরা ওরফে রত্না। এর আগেও তিনজনকে একইভাবে তৃতীয় লিঙ্গে রূপান্তরের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। তবে হিজড়া সরদার রত্নার দাবি, হিজড়াদের অন্য একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধে এরকম ‘ভুয়া সংবাদ’ ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে।